মার্কাজুল মাআরিফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, মুম্বাইয়ের সমাবর্তন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মাওলানা সৈয়দ তালহা নকশবন্দীর বিশেষ ভাষণ।
জামিল আহমেদ কাসমি
মাদ্রাসা পড়ওয়া শিক্ষারথীদের কে ইংরেজি ভাষা, সাহিত্য ও নির্বাচিত সমসাময়িক বিষয়গুলির সাথে সজ্জিত করার জন্য ভারতের একটি সুপরিচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মার্কাজুল মাআরিফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (MMERC) মুম্বাই, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের দুই বছরের ডিপ্লোমা কোর্স, ও মক্তব মার্কাজুল মাআরিফ এর ব্যাপক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ২ মার্চ ২০২৪ ইং রোজ শনিবারে একটি সভা আয়োজন করা হয়, যাতে মার্কাজুল মাআরিফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের স্নাতক ও মক্তবের কোর্স সম্পন্ন করা ছাত্র-ছাত্রীদের সনদ ও বিভিন্ন পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এই উপলক্ষ্যে মার্কাজুল মাআরিফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের বিপুল সংখ্যক প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দ বিশেষ করে মাওলানা ফিরোজ আলম কাসমি মালাউই আফ্রিকা, মাওলানা সিকান্দার আজম, মাওলানা আবদুল্লাহ কাসমি, মুফতি আবদুল রউফ কাসমি, ও মাওলানা শাহ ফয়সাল কাসমি, অংশগ্রহণ করেন। এবং উক্ত অনুষ্ঠানে মক্তব মার্কাজুল মাআরিফের ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক স্থানীয় মানুষ, নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
![Audience](https://bangla.easterncrescent.net/wp-content/uploads/2024/03/people-300x116.jpeg)
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তৈয়িবিয়া মেডিকেল কলেজ ও কালসেকার হাসপাতালের সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ডাঃ ঈসা নদভী সাহেব ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাফিজ ইকবাল চুনাওয়ালা মেম্বার উপদেষ্টা বোর্ড দরুল উলুম ওয়াকফ দেওবন্দ।
আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কাজুল মাআরিফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার এর ছাত্র ক্বারী শাকিল নুমানীর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং মাওলানা জাহাঙ্গীর শেখের হৃদয়গ্রাহী নাত-ই-পাকের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এর পর মার্কাজুল মাআরিফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের দ্বারা পরিচালিত মক্তব মারকাজুল মাআরিফ এর ছাত্ররা ক্বিরাত, নাত ও কথপোকথন এর মাধ্যমে খুব সুন্দর অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন।
মক্তবের ছেলেমেয়েদের দ্বারা একটি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান উপস্থাপনের পর, MMERC-এর ছাত্র মাওলানা তৌকীর রহমানি তাদের দিন-রাত্রি কীভাবে কাটিয়েছেন এবং দুই বছরে উনারা কী অর্জন করেছেন তাদের দুই বছরের পর্যালোচনা ইংরেজিতে পেশ করেন। এরপর বর্ষসেরা বক্তার খেতাব জয়ী মাওলানা জহিরুল ইসলাম কাসমি ইংরেজিতে ‘ইমাজিনেশন অব গড ইন মেজর রিলিজিয়নস অব ওয়ার্ল্ড’ শিরোনামে একটি চিন্তা-উদ্দীপক বক্তৃতা পেশ করেন।
তার পর মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, মাওলানা ইলিয়াস ও মাওলানা জাহাঙ্গীর, সকল ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে অত্যন্ত আবেগঘন দর্শকদের মুগ্ধ করা বিদায়ী ক্বছিদা উপস্থাপন করেন।
এই অনুষ্ঠানে দুটি বইও প্রকাশ করা হয়, প্রথম বইটি ছিল মাওলানা মুহাম্মদ বুরহানউদ্দিন কাসমির ইংরেজি ভাষায় লেখা।”Seeratun Nabi-Biograpy of the Greatest Man Ever” (সেরাতুন নবী, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবের জীবনী) এবং দ্বিতীয় বইটি ছিল ডঃ ঈসা নদভী কর্তৃক সংকলিত “কুরআনের আয়াতের নির্বাচিত অনুবাদ”।
![Seeratun Nabi: Biography of the Greatest Man Ever - Prophet Muhammad (saws)" penned in English by Maulana Muhammad Burhanuddin Qasmi](https://bangla.easterncrescent.net/wp-content/uploads/2024/03/IMG20240302161711-300x225.jpg)
মার্কাজুল মাআরিফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার এর পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ বুরহানউদ্দিন কাসমি শিক্ষার্থীদের শেষ উপদেশ দিতে গিয়ে বলেন, আমরা তোমাদেরকে এক এক জন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলার চেষ্টা করেছি, এবং তোমাদেরকে এই শিক্ষা নিতে হবে যে, পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন দুনিয়ার স্বার্থে দ্বীনের উপর ব্যবসা করব না। এর পর তিনি সার্টিফিকেট ও পুরস্কার ঘোষণা করলেন।
![M Mohammad Burhanuddin Qasmi](https://bangla.easterncrescent.net/wp-content/uploads/2024/03/mbqasmi-300x153.jpeg)
উল্লেখ্য, উন্নত একাডেমিক পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে মার্কাজুল মাআরিফের ছাত্র মাওলানা নওয়াজ আশরাফ নদভীকে প্রথম, মাওলানা হাসান খানকে দ্বিতীয় এবং মাওলানা জাহিরুল ইসলাম কাসমিকে তৃতীয় স্থানে পুরস্কৃত করা হয়।
পুরো বছর প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের মেডেল ও ল্যাপটপ আকারে পুরস্কার দেওয়া হয়।
বর্ষসেরা লেখকের পুরস্কার পেয়েছেন মাওলানা জাহাঙ্গীর শেখ ও মাওলানা তোকীর রহমানী।পাংচুয়াল স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার মুহাম্মদ সোলয়া রফিক ভাই, শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্বের পুরস্কার মাওলানা হামজা কাসমি, দক্ষ ব্যক্তিত্ব পুরস্কার মাওলানা জুবায়ের আহমেদ কাসমি, আনন্দদায়ক ব্যক্তিত্ব পুরস্কার মাওলানা আবদুর রহমান কাসমি, সামাজিক ব্যক্তিত্ব পুরস্কার মাওলানা নওয়াজ আশরাফ নদভি, আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব পুরস্কার মাওলানা এতেবার আহমদ ও স্পোর্টসম্যান অব দ্য ইয়ার পুরস্কার দেওয়া হয় মাওলানা মুহাম্মদ সালমান আলম কাসমিকে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সৈয়দ মাওলানা তালহা নকশবন্দী খলিফা হযরত মাওলানা পীর জুলফিকার আহমেদ নকশবন্দী তার বক্তব্যে বলেন, যে ভাষা বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করে সেই ভাষা শেখা আমাদের দায়িত্ব।এই ভাষার সাথে সুসজ্জিত হওয়া সময়ের দাবি ও যারা এই ভাষার সাথে পরিচিত তাদের কাছে দ্বীন হানিফ (সটীক দ্বীন) পৌঁছে দেওয়া ধর্মীয় প্রয়োজন। মহান আল্লাহ তায়ালা নবীদেরকে তাদের লোকদের ভাষা দিয়ে প্রেরণ করেছেন যাতে লোকেরা সঠিকভাবে আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করতে পারে, বুঝতে পেরে।
তিনি মাওলানা বদরুদ্দিন আজমল আল কাসিমিকেও ধন্যবাদ জানান, যার প্রচেষ্টায় আজ হাজার হাজার আলেম ইংরেজি ভাষা সিখে দ্বীন ও মিল্লাতের সেবা করিতেছেন। অবশেষে হযরতের দুয়ার মাধ্যমে উক্ত অনুষ্ঠানের সমাপ্ত হয়।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাওলানা মোয়াজ মুদাসসির আহমেদ কাসিমি।
প্রোগ্রাম সফল করার জন্য মূল্যবান সহায়তা প্রদান করেছে মার্কাজুল মাআরিফের ইনচার্জ মাওলানা আতিক-উর-রহমান কাসমী, ইমাম ও খতিব মাওলানা শাহীদ কাসমি, শিক্ষকমন্ডলী মাওলানা আসলাম জাভেদ কাসমি, মুফতি জসীমউদ্দিন কাসমি, মাওলানা জামিল আহমেদ কাসমি ও মাওলানা ওয়াসিম আকরাম কাসমি প্রমুখ।