আমার শ্রদ্ধার দ্বিনী ভাইয়েরা
আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্
পরম করুনাময় আল্লাহ পাকের দয়ায় রহমত,মাগ্বফিরাত এবং জাহান্নাম থেকে নাজাত পাওয়ার পবিত্র মাসের শেষে আমরা আজ এসে ঈদগাহে উপস্থিত হয়েছি।মুমিন বান্দার জন্য আজকের এই দিনটা অন্যন্ত আনন্দের এই জন্য যে,আল্লাহ পাক ফেরেস্তাদের সাক্ষী রেখে প্রতিজন রোজাদারকে মাফ করে দিবেন।
ঈদগাহ থেকে প্রত্যার্বতনের পূর্বে আমাদের অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।অবশ্য বান্দার হক্ব সমন্ধীয় গোনাহ ইহার অন্তর্ভুক্ত নয়।আমরা যদি কোন বান্দার হক্ব নষ্ট করে থাকি তাহলে তাহা ক্ষমার একমাত্র রাস্তা তাহার হক্ব আদায় করে দেওয়া অথবা তাহার কাছে থেকে মাফি চেয়ে নেওয়া
বিরাদরানে ইসলাম আমাদের মনে রাখা উচিৎ যে,আজ আল্লাহ পাক মাগফিরাতের দরজা খুলে দিছেন, এটা রমজানে আমাদের করা মেহনত মুজাহাদার পুরস্কার। এর অর্থ এটা নয় যে, আমাদের জীবনের বাকি দিনগুলোর গোনাহ্ মাফ করে দেওয়া হয়েছে।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, ঈদের রাত থেকেই আমাদের মসজিদে নামাজির সংখ্যা কমে আসে। রমজান মাসে ত্যাগ করা গোনাহে কিছু মানুষ আবারও লিপ্ত হয়ে পড়ে।
সম্মানীত ভাইয়েরা আসুন আমরা সবাই সংকল্পবদ্ধ হই, যে পরম দয়ালু আল্লাহ আমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে আমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, চিরশত্রু শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে আমরা যেনো সেই আল্লাহ ও তাহার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নারাজ না করি।
দ্বীন দরদী ভাইসব সমগ্র বিশ্বে মুসলমানরা এক অশান্ত তথা অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে দিন অতিবাহিত করে আসছে। উম্মতের ধনী-দরিদ্র, ছোট-বড় সবাই এক অবর্ণনীয় গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তার জন্য আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনকে দায়ী করে থাকি যদিও তাহার প্রকৃত কারন আমাদের আমল
প্রবিত্র ক্বোরআন শরীফ ও হাদিসে তাহার বহু প্রমাণ আছে। আমাদের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত কোন পর্য্যায়ে আমরা আল্লাহকে নারাজ করে শান্তিতে থাকতে পারব না। আল্লাহ নারাজ হলে জগতের কোন শক্তিই আমাদেরকে রক্ষা করতে পারব না। আর আল্লাহ রাজি থাকলে জগতের কোন শক্তিই আমাদের কিছুই করতে পারব না
আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার প্রধান রাস্তা হচ্ছে গোনাহ থেকে তাওবা করা। আমরা সবাই দৃঢ়সংকল্প করি যে নামাজ ক্বাজা করব না ও সবরকমের গোনাহের সাথে বিশেষ করে সমাজে মহামারির মতন প্রসারিত হওয়া অভিশপ্ত সুদের লেনদেন থেকে আমরা নিজেও বাঁচবো এবং সমাজকেও বাঁচবো। তার জন্য সমাজের দায়িত্বশীল সকলে সার্বজনীন অভিযান আরম্ভ করুন
প্রবিত্র ক্বোরআনে বলা হয়েছে,, সুদের লেনদেন যারা করে তাদের সহিত আল্লাহ যুদ্ধের ঘোষণা করে রেখেছেন। তদ্রুপ হাদিস শরীফে এসেছে,যে সমাজে সুদ আর জিনা (ব্যভিচার) ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করবে সেই সমাজ যেনো ২৪ ঘণ্টাই আল্লাহর গজবকে আহ্বান করতে থাকে
সেই জন্য যারা সুদের লেনদেনে জড়িত রয়েছেন, চোখ বন্ধ করে একবার ভেবে দেখবেন কি করছেন?
আসুন আমরা চিন্তা করে চাই, একদিকে আমরা আল্লাহের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে আছি আর অন্যদিকে আল্লাহর গায়বি নুছরত বা অদৃশ্য সাহায্যর আশা করছি।
আসুন আমরা সবাই মিলে আল্লাহর দিকে ধাবিত হই, গোনাহ থেকে বেঁচে এক পবিত্র ইসলামিক জীবনযাপন করার চেষ্টা করি, বিপদ-আপদ থেকে বাঁচার জন্য পরুষরা মসজিদে ও মহিলারা ঘরে নিয়মিত দোয়া ও খতমের ব্যবস্হা করুন।
ইতি—–
(মাওলানা) শ্বেখ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া
আমীরে শরীয়ত,উত্তর-পূর্ব ভারত।